সর্বশেষ
অক্টোবর ১২, ২০২৫

পোল্যান্ডের শান্ত গ্রামে লুকানো হিটলারের ভূগর্ভস্থ নগরী!

Spread the love

উপরে শান্ত-সৌম্য প্রকৃতি—হলুদ ফসলের মাঠ, বিস্তৃত আকাশ আর ছায়াঘেরা বন। কিন্তু মাটির নিচেই লুকিয়ে আছে ইতিহাসের ভয়াল ছাপ—নাৎসিদের নির্মিত এক বিশাল ভূগর্ভস্থ নগরী।ফেস্টুংসফ্রন্ট ওডার-ভার্টে-বোগেন (Ostwall) নামের এই দুর্গ-নগরী ১৯৩০-এর দশকে তৈরি করা হয় হিটলারের পূর্ব ফ্রন্ট সুরক্ষার পরিকল্পনার অংশ হিসেবে। ২০ মাইল দীর্ঘ এই জটিল টানেল ও সুড়ঙ্গের ভেতরে ছিল রেলস্টেশন, যুদ্ধকক্ষ, বিশাল শ্যাফট এবং হাজারো সৈন্য রাখার ব্যবস্থা।কিন্তু ১৯৩৮ সালে জার্মানির কৌশল বদলে যাওয়ায় নির্মাণ থেমে যায়। ১৯৪৫ সালে রেড আর্মি মাত্র তিন দিনে দখল করে নেয় এই অজেয় বলে মনে হওয়া দুর্গ। যুদ্ধের পর কিছুদিন পোলিশ সেনারা ব্যবহার করলেও ষাটের দশকে এটি সম্পূর্ণ পরিত্যক্ত হয়।আজ এই ভুতুড়ে ভূগর্ভস্থ সামরিক প্রকল্প একটি পর্যটন আকর্ষণ। ২০১১ সালে Międzyrzecz Fortified Region Museum চালু হওয়ার পর থেকে হাজারো পর্যটক ইতিহাস, অন্ধকার ও রহস্যের টানে এখানে ভিড় জমাচ্ছে।বাদুড়ের রাজ্যনাৎসি সেনারা চলে গেছে বহু আগেই, কিন্তু এখনকার বাসিন্দা লাখো বাদুড়। শীতকালে প্রায় ৪০,০০০ বাদুড় এখানে হাইবারনেশনে থাকে—যা ইউরোপের সবচেয়ে বড় বাদুড় উপনিবেশগুলির একটি।টানেলের মানুষ১৯৮০-৯০-এর দশকে এখানে জন্ম নেয় এক ভিন্ন সাবকালচার—“বাঙ্কার পিপল।” তারা ভূগর্ভস্থ এই দুর্গকে রেভ পার্টি, বিয়ে এবং প্রতিবাদী কর্মকাণ্ডের জন্য ব্যবহার করেছিল। দেয়ালে আজও রয়ে গেছে তাদের আঁকা গ্রাফিতি ও স্লোগান।আজকের পর্যটনএখন পর্যটকরা বেছে নিতে পারেন তিন ধরণের ট্যুর—সংক্ষিপ্ত (১.৫ ঘন্টা), দীর্ঘ (২.৫ ঘন্টা) এবং চরম (৩-৮ ঘন্টা)। আছে আন্ডারগ্রাউন্ড ট্রেন ভ্রমণ, এমনকি সোভিয়েত যুগের সাঁজোয়া যানেও চড়ার অভিজ্ঞতা।আর চারপাশের অঞ্চলও সমৃদ্ধ—“পোলিশ টাস্কানি” নামে খ্যাত Zielona Gora-তে রয়েছে আঙ্গুরক্ষেত ও ঐতিহ্যবাহী ওয়াইন উৎসব। কাছেই Świebodzin-এ দাঁড়িয়ে আছে বিশ্বের সবচেয়ে উঁচু যিশুর মূর্তি।একই ভ্রমণে ইতিহাস, প্রকৃতি, ধর্মীয় বিস্ময় আর সুমিষ্ট ওয়াইন—এমন বৈপরীত্য একসাথে বিরল।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *