জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারী গুইন লুইস (Gwyn Lewis) আজ মঙ্গলবার রাষ্ট্র অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনুসের সঙ্গে বিদায় সাক্ষাৎ করেন।সাক্ষাৎকালে তিনি অধ্যাপক ইউনুসের নিউইয়র্ক সফরকে “অত্যন্ত সফল ও ঐতিহাসিক” বলে উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৮০তম অধিবেশনে অংশগ্রহণের পাশাপাশি অধ্যাপক ইউনুস এক ডজনেরও বেশি বিশ্বনেতার সঙ্গে বৈঠক করেন এবং রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে জাতিসংঘের গুরুত্বপূর্ণ সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন।গুইন লুইস বাংলাদেশের প্রতিনিধি দলের বৈচিত্র্যপূর্ণ ও ঐক্যবদ্ধ উপস্থিতিকে “জাতীয় ঐক্যের শক্তিশালী প্রতীক” হিসেবে অভিহিত করেন। উল্লেখ্য, এবারই প্রথমবারের মতো বাংলাদেশ প্রতিনিধি দলে ছয়টি প্রধান রাজনৈতিক দলের নেতা অন্তর্ভুক্ত ছিলেন।দুই পক্ষের আলোচনায় বাংলাদেশের আসন্ন জাতীয় নির্বাচন, টেকসই সহযোগিতা, উদ্ভাবন, এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক প্রবৃদ্ধি নিয়ে আলোচনা হয়।নিজের তিন বছর ছয় মাসের দায়িত্বকাল নিয়ে আবেগঘন অনুভূতি প্রকাশ করে গুইন লুইস বলেন,“বাংলাদেশের মানুষের পাশে থেকে কাজ করা আমার পেশাজীবনের অন্যতম শ্রেষ্ঠ সম্মান।”তিনি আরও বলেন, “আমি বাংলাদেশের মানুষের স্থিতিশীলতা, সৃজনশীলতা ও উদারতা প্রত্যক্ষ করেছি। সরকার, সিভিল সোসাইটি ও উন্নয়ন সহযোগীদের সঙ্গে কাজ করা ছিল গভীরভাবে অনুপ্রেরণামূলক।”অধ্যাপক ইউনুস সম্পর্কে তিনি বলেন,“সামাজিক উদ্ভাবন ও সমতা প্রতিষ্ঠায় তাঁর আজীবন নিবেদন বিশ্বজুড়ে লক্ষ মানুষের অনুপ্রেরণা।”তার মেয়াদকালে জাতিসংঘ ও বাংলাদেশ সরকার UN Sustainable Development Cooperation Framework (২০২২–২০২৬) এর আওতায় যৌথভাবে বিভিন্ন কার্যক্রম পরিচালনা করেছে, যা বাংলাদেশের অষ্টম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ।এই সময়ের উল্লেখযোগ্য অর্জনের মধ্যে ছিল ঢাকায় জাতিসংঘ মানবাধিকার হাইকমিশনারের (OHCHR) নতুন মিশন উদ্বোধন, যা বাংলাদেশের মানবাধিকার খাতে জাতিসংঘের উপস্থিতি আরও দৃঢ় করেছে।এছাড়া, বাংলাদেশকে স্বল্পোন্নত দেশ (LDC) থেকে উত্তরণের প্রস্তুতিতে সহায়তা, শ্রম, স্বাস্থ্য ও শিক্ষা খাতে সংস্কার এবং জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় সমন্বিত কর্মসূচি চালু করেছে জাতিসংঘ।গুইন লুইস বাংলাদেশের বৈশ্বিক নেতৃত্বের প্রশংসা করে বলেন,“Early Warning for All, Transforming Education, এবং Food Systems Summit-এর মতো বৈশ্বিক উদ্যোগে বাংলাদেশের নেতৃত্ব সত্যিই প্রশংসনীয়।”তিনি যোগ করেন, “বাংলাদেশ ও জাতিসংঘের অংশীদারিত্ব সমৃদ্ধ, টেকসই ও মানবিক ভবিষ্যতের প্রতিশ্রুতি বহন করে।”