শামে আল-শেইখ, মিশর — গাজা উপত্যকার দুই বছরের যুদ্ধে সাময়িক শান্তির আলো দেখাচ্ছে সংকটে থাকা দেশগুলোর আশা। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ২০-পয়েন্ট শান্তি পরিকল্পনার আলোচনায় যুক্ত হলো তার বিশেষ প্রতিনিধি স্টিভ উইটকফ ও জামাত জ্যারেড কুশনার, যারা গতকাল মিশরে পৌঁছেছে। এই আলোচনা মূলত পাঁচটি চাবিকাঠির সমস্যাকে কেন্দ্র করে:১. স্থায়ী যুদ্ধবিরতি২. বাকি বন্দিদের মুক্তি ও তাদের বিনিময়৩. ইসরায়েলি বাহিনীর গাজা থেকে প্রত্যাহার৪. হিউম্যানিটারিয়ান সহায়তা ও রিলিফ প্রবাহ৫. যুদ্ধোত্তর শাসন ও প্রশাসনিক কাঠামো নিশ্চিতকরণ আলোচনার মূল দ্বন্দ্ববিশ্বস্ততার গ্যারান্টি: হামাস চায় লিখিত, আন্তর্জাতিক গ্যারান্টি যেন ইসরায়েল যুদ্ধ পুনরায় পুনরায় শুরু না করে। সশস্ত্র ক্ষমতা ও নিরাপত্তা ব্যবস্থাপনা: ট্রাম্পের পরিকল্পনায় গাজা একটি আন্তর্জাতিক তত্ত্বাবধায়ক ব্যবস্থা ও শান্তিরক্ষা বাহিনীর অধীনে থাকবে। মুক্তি ও বিনিময় নিয়ন্ত্রণ: বন্দির মুক্তি ও পুনর্বিনিময়ে কত শতাংশে করণ হবে, এই ইস্যুতে দুই পক্ষের মধ্যে তফাৎ রয়ে গেছে। যুদ্ধবিরতির মেয়াদ ও ধাপে ধাপে পদক্ষেপ: ইসরায়েল চায় ধাপে ধাপে প্রত্যাহার, কিন্তু হামাস সম্মতিসম্পন্ন সময়সীমা ও শর্ত চায়। ট্রাম্পের শান্তি পরিকল্পনার একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ হলো গাজাকে একটি انتقالي শাসন ব্যবস্থা (Gaza International Transitional Authority), যেখানে স্থানীয় প্রশাসন ও আন্তর্জাতিক তত্ত্বাবধান সমন্বয় করবে। প্রতিক্রিয়া ও পরিণতিইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বলেছিলেন, যুদ্ধেবল অবস্থা বৈধ হবে যাতে সব বন্দি ফিরিয়ে আনা যায় ও হামাসের আধিপত্য অবসান হয়। হামাসের প্রধান আলোচক খলিল আল-হায়া বলেছেন, তারা “গম্ভীর ও দায়িত্বশীল” আলোচনায় বসেছে তবে যুদ্ধ বন্ধ ও পুনরাবৃত্তি বন্ধ রাখার গ্যারান্টি চান। সামাজিক ও মানবিকভাবে গাজার জনগণ অত্যন্ত দুরবস্থায়, খাদ্য, পানির অভাবে বহু রোগ ও ক্ষুধার ভাজাপড়ার মুখে। এই শান্তিচুক্তি যদি সফলভাবে বাস্তবায়িত হয়, তাহলে এটি হবে মধ্যপ্রাচ্যে একটি বিরল উদাহরণ — দুটি যুদ্ধবিদ্ধ পক্ষকে আন্তর্জাতিক গ্যারান্টি ও তত্ত্বাবধায়ক ব্যবস্থার অধীনে শান্তিতে পরিণত করার প্রচেষ্টার এক মাইলফলক। তবে এখনও অনেক প্রশ্ন অমীমাংসিত: শান্তি নিশ্চিত হবে কীভাবে, পুনর্বাসন শুরু হবে কত দ্রুত, এবং স্থানীয় সমাজে গ্রহণযোগ্য হবে কী না — এসবই নির্ধারণ করবে আগামী দিনের বাস্তব রাজনীতি।