বাংলাদেশ স্থায়ী মিশন, জাতিসংঘে অনুষ্ঠিত এক নৈশভোজে শ্রম অধিকার ও সংস্কার নিয়ে উচ্চপর্যায়ের আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়েছে। এই আলোচনায় উপস্থিত ছিলেন কূটনীতিক, জাতিসংঘের কর্মকর্তারা এবং বাংলাদেশের তিনটি প্রধান রাজনৈতিক দলের শীর্ষ নেতৃবৃন্দ।প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনুস। তিনি তাঁর বক্তব্যে জোর দিয়ে বলেন, বাংলাদেশের শ্রম আইন ও সংস্কার আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার (আইএলও) কনভেনশনের সাথে সামঞ্জস্য রেখে দ্রুত বাস্তবায়ন করতে হবে। এর ফলে বাংলাদেশে ব্যাপক বৈদেশিক বিনিয়োগ আকর্ষিত হবে এবং দেশের অর্থনীতি নতুন দিগন্তে পৌঁছাবে।সভাটি পরিচালনা করেন প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ দূত লুৎফে সিদ্দিকী। আলোচনায় আইএলও মহাপরিচালকসহ জাতিসংঘের বিভিন্ন সংস্থার প্রতিনিধিরা অংশ নেন।তিন রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিরা শ্রম সংস্কারের প্রয়োজনীয়তার উপর একমত প্রকাশ করেন। বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, গার্মেন্টস শিল্প বাংলাদেশের অর্থনীতির প্রাণকেন্দ্র। ভবিষ্যৎ সরকার যেই আসুক না কেন, এই শিল্পের টেকসই উন্নয়নে শ্রম সংস্কার অপরিহার্য।জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমীর সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের বলেন, তাঁদের দলের অনেকেই গার্মেন্টস খাতের সঙ্গে প্রত্যক্ষভাবে যুক্ত। এজন্য তাঁরা জানেন কীভাবে এই খাতকে বিশ্ব প্রতিযোগিতায় আরও শক্তিশালী করা যায়।বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা হুমায়ুন কবির বলেন, বর্তমান শ্রম সংস্কারের উদ্যোগকে শুধু অব্যাহত নয় বরং বিস্তৃত করতে হবে।সব বক্তার মধ্যে একটি সাধারণ বিষয় ছিল—বাংলাদেশের পোশাক রপ্তানির ন্যায্য দাম নিশ্চিত করা। তাঁরা বলেন, “সব সময় ক্রেতাই শর্ত নির্ধারণ করবে, এটা চলতে পারে না।”ন্যাশনালিস্ট সিটিজেনস পার্টি (এনসিপি) নেতা ডা. তাসনিম জারা ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা শেয়ার করে বলেন, রানা প্লাজা ট্র্যাজেডি তাঁর রাজনৈতিক যাত্রার মোড় ঘুরিয়ে দেয়। মেডিকেল শিক্ষার্থী অবস্থায় আহত শ্রমিকদের সেবা দিতে গিয়ে তিনি প্রত্যক্ষ করেন শ্রমিকদের মানবেতর অবস্থা। তাঁর মতে, “এখনই সময় মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে সংস্কারকে বাস্তবায়ন করার।”শেষ বক্তব্যে প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনুস আবারও আশ্বাস দেন যে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার অর্থবহ ও স্থায়ী সংস্কার বাস্তবায়নে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।