দাঁড়িপাল্লার ‘জোয়ার’ পার্লামেন্টে পৌঁছাবেই: কয়রায় জামায়াতের ঐতিহাসিক ছাত্র-যুব সমাবেশে মিয়া গোলাম পরওয়ারের ‘আগুন’ বক্তব্য!উপ-শিরোনাম: কালো টাকা, মনোনয়ন বাণিজ্যকারী আর চোর-ডাকাতদের কারণে পিআর পদ্ধতির বিরোধিতা, জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি ও গণভোটের দাবি জামায়াত সেক্রেটারি জেনারেলের।প্রতিবেদনকয়রায় জামায়াতে ইসলামীর ঐতিহাসিক ছাত্র-যুব সমাবেশ অনুষ্ঠিতনিউজবিডি২৪লাইভ ডেস্ক:খুলনা, ১২ অক্টোবর, ২০২৪: বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল ও সাবেক এমপি মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেছেন, সুন্দরবন সংলগ্ন বঙ্গোপসাগরের জনপদ থেকে ‘দাঁড়িপাল্লার যে জোয়ার’ সৃষ্টি হয়েছে, তাকে পার্লামেন্ট পর্যন্ত পৌঁছে দিতে হবে। কালো টাকা, মনোনয়ন বাণিজ্য, চোর, ডাকাত ও চাঁদাবাজদের যারা নির্বাচিত করতে পারবে না, তারাই আনুপাতিক প্রতিনিধিত্ব (পিআর) পদ্ধতির বিরোধিতা করছেন। তিনি অবিলম্বে জুলাই সনদকে আইনী ভিত্তি দিয়ে আগামী নির্বাচন কেমন হবে তা নির্ধারণে গণভোট নেওয়ার জোর দাবি জানান। তিনি স্পষ্ট করে বলেন, জনগণ যদি পিআর’র বিপক্ষে রায় দেয়, জামায়াত সেই রায় মাথা পেতে নেবে।শনিবার (১১ অক্টোবর) বিকেলে খুলনার কয়রা কপোতাক্ষ কলেজ মাঠে কয়রা উপজেলা জামায়াতে ইসলামীর উদ্যোগে আয়োজিত ঐতিহাসিক ছাত্র-যুব সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন।প্রশাসনকে নিরপেক্ষ করার দাবিমিয়া গোলাম পরওয়ার আরও বলেন, বর্তমান নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত হয়নি। একটি বিশেষ দলকে খুশি করতে প্রশাসন তাদের দিকে ঝুঁকে পড়েছে। তিনি প্রশাসনকে অবশ্যই নিরপেক্ষ হওয়ার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, “৫৪ বছরের ইতিহাসে আমরা অনেক শাসন দেখেছি। এখন দেশের মানুষ জামায়াতকে রাষ্ট্র ক্ষমতায় দেখতে চায়। সারাদেশে দাঁড়িপাল্লার পক্ষে জোয়ার সৃষ্টি হয়েছে।”দুর্নীতির বিরুদ্ধে সংগ্রাম: ক্ষমতায় গেলে এমপিরা ফ্রি প্লট বা গাড়ি নেবেন নাসেক্রেটারি জেনারেল বলেন, আমীরে জামায়াত ঘোষণা করেছেন যে, জামায়াত ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে সংগ্রাম করেছে এবং তাদের আগামী দিনের সংগ্রাম হবে দুর্নীতির বিরুদ্ধে। তিনি উদাহরণ দিয়ে বলেন, জামায়াত যখন ক্ষমতার অংশীদার হয়েছিল, তাদের দুজন মন্ত্রী ছিলেন এবং সকল সংস্থা তন্নতন্ন করেও তাদের কোনো দুর্নীতি খুঁজে পায়নি। তিনি অঙ্গীকার করেন, “আগামী দিনে জামায়াত ক্ষমতায় গেলে এই দলের এমপিরা ফ্রি প্লট, ট্যাক্স ফ্রি গাড়ি বা ফ্ল্যাট নেবেন না।”ইসলামী দলের বিজয়ের ইঙ্গিতসমাবেশে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য, খুলনা অঞ্চল সহকারী পরিচালক ও খুলনা-৬ আসনের জামায়াত মনোনীত সংসদ সদস্য প্রার্থী মাওলানা আবুল কালাম আজাদ এবং বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের সেক্রেটারি জেনারেল নূরুল ইসলাম সাদ্দাম।মাওলানা আবুল কালাম আজাদ বলেন, দেশের মানুষ বিগত তিনটি নির্বাচনে ভোট দিতে পারেনি। তিনি বিশ্বাস করেন, এবারের নির্বাচন মহাউৎসবের সাথে পালিত হবে। তিনি উল্লেখ করেন, দেশের সকল ইসলামী দল ঐক্যবদ্ধ হয়েছে এবং আজকের কর্মসূচিতে পর্দার আড়ালে মা-বোনসহ বহু হিন্দু ভাইও উপস্থিত হয়েছেন, যারা ভোটে দাঁড়িপাল্লার জন্য কাজ করবেন।নূরুল ইসলাম সাদ্দাম বলেন, আজকের সমাবেশ ইঙ্গিত দিচ্ছে যে আগামীর বাংলাদেশ কোন পথে যাবে। তিনি দাবি করেন, এ পর্যন্ত যত সমীক্ষা হয়েছে, সব সমীক্ষায় দেখা গেছে যে আগামীতে ইসলামী দল বিজয়ী হবে। পিআর পদ্ধতির বিরোধিতাকারীদের সমালোচনা করে তিনি বলেন, “ক্ষমতায় যাওয়ার আগেই যারা দেশটাকে লুটপাটের স্বর্গরাজ্য বানিয়ে ফেলেছেন, তারাই এই সিস্টেমের বিরোধিতা করছেন। এ দেশের তরুণ যুবকরা জেগে উঠেছে এবং এই প্রজন্ম আগামী নির্বাচনে তাদেরকে প্রতিহত করবে।”কয়রা উপজেলা আমীর মাওলানা মিজানুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এই সমাবেশ পরিচালনা করেন কয়রা উপজেলা সেক্রেটারি মাওলানা শেখ মো. সায়ফুল্যাহ। সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের স্কুল কার্যক্রম সম্পাদক নোমান হোসেন নয়ন, খুলনা জেলা জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমীর মাওলানা গোলাম সরোয়ার, সেক্রেটারি মুন্সি মিজানুর রহমানসহ জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ, এবং ইসলামী শাসনতন্ত্র আন্দোলনের খুলনা জেলার সহ-সভাপতি হাফেজ মোহাম্মদ আসাদুল্যাহ আল গালিব, কয়রা উপজেলা হিন্দু কমিটির সাধারণ সম্পাদক কিরন চন্দ্র মন্ডল সহ অনেকে।