ইউরোপিয়ান ফুটবলের সবচেয়ে সফল ও ক্যারিশম্যাটিক ম্যানেজারদের একজন ইয়ুর্গেন ক্লপ সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে নিজের জীবনের অজানা কিছু দিক খোলাসা করেছেন। কোচিংয়ের চাপ, ব্যক্তিগত জীবন থেকে বিচ্ছিন্নতা এবং মানসিক অস্থিরতার অভিজ্ঞতা নিয়ে খোলামেলা কথা বলেছেন লিভারপুলের সাবেক এই কিংবদন্তি।ক্লপ জানান, গত ২৫ বছরের দীর্ঘ কোচিং ক্যারিয়ারে তিনি মাত্র দুটি বিয়েতে অংশ নিতে পেরেছেন। একটি ছিল তাঁর নিজের বিয়ে, অন্যটি গত বছর যখন তিনি কোচিং ছেড়েছেন। একইভাবে ফ্যামিলির সাথে সিনেমা হলে গিয়ে চারবার মুভি দেখা হয়েছে, সবগুলোই কোচিং ছেড়ে দেওয়ার পর।তিনি বলেন, “কোচিং করার সময় আমার নিজের জীবনের জন্য কোনো জায়গা ছিল না। আমি একদম খালি হয়ে গিয়েছিলাম। এখন মনে হয় আমি একটা ওপেন বুক। আমি আর কখনও কোচিংয়ে ফিরতে চাই না।”এই সাক্ষাৎকার থেকে পরিষ্কার বোঝা যায়, কোচদের পারিবারিক জীবন ধরে রাখা ভীষণ কঠিন। যেমনটা দেখা গেছে আরেক কিংবদন্তি কোচ পেপ গার্দিওলার ব্যক্তিগত জীবনে—দীর্ঘদিন লয়াল থাকা সত্ত্বেও স্ত্রীকে ধরে রাখতে ব্যর্থ হয়েছেন। মরিনহোরও ব্যক্তিগত জীবনে এসেছে নানা ধাক্কা।ফুটবল ভক্তরা সপ্তাহে এক বা দুই ম্যাচ উপভোগ করেন। কিন্তু খেলোয়াড় ও কোচদের প্রায় ১০ মাস ধরে অনবরত মানসিক ও শারীরিক চাপের ভেতর দিয়ে যেতে হয়। খেলোয়াড়রা শরীর দিয়ে বিনিয়োগ করেন, কোচরা বিনিয়োগ করেন মস্তিষ্ক দিয়ে। এই যাঁতাকলে অনেকেই হারিয়ে ফেলেন ব্যক্তিগত শান্তি ও পরিবারকে।ফুটবল ক্যারিয়ারের ব্যস্ততার কারণে নিজের সন্তানের জীবনের গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্তগুলোয় উপস্থিত থাকতে না পারার কষ্ট সারাজীবনের জন্য বয়ে বেড়াতে হয়। ক্লপ সময় থাকতে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন নিজেকে পরিবারে ফেরত দেওয়ার।এই সাক্ষাৎকার কেবল ফুটবল প্রেমীদের জন্যই নয়, বরং জীবন ও ক্যারিয়ারের ভারসাম্য নিয়ে ভাবার জন্যও একটি বড় শিক্ষা।