বাংলাদেশের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো ইউনেস্কো (UNESCO) সাধারণ সম্মেলনের সভাপতির আসনে নির্বাচিত হলো। ২০২৫ সালের ৭ অক্টোবর পার্লিসে অনুষ্ঠিত ২২২তম ইউনেস্কো নির্বাহী বোর্ড-এর ভোটে বাংলাদেশি প্রার্থী রাষ্ট্রদূত খন্দকার এম. তালহা ৩০ ভোটে জয়ের মুখ দেখেন, প্রতিদ্বন্দ্বী জাপানকে হারিয়ে। প্রধান নির্বাচনপ্রক্রিয়ায় প্রারম্ভিকভাবে ভারত ও দক্ষিণ কোরিয়া সহ চারটি দেশ অংশগ্রহণ করেছিল, তবে সেপ্টেম্বর মাসে ভারত ও দক্ষিণ কোরিয়া তাদের প্রার্থিতা প্রত্যাহার করে নেয়। নির্বাচিত রাষ্ট্রদূত খন্দকার এম. তালহা বর্তমানে বাংলাদেশকে প্রতিনিধিত্ব করছেন ইউনেস্কো-তে এবং এ ছাড়া তিনি ফ্রান্স, মোনাকো ও কোত দ’ইভোয়ারে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত। তিনি আগামী সাধারণ সম্মেলনে রোমানিয়ার রাষ্ট্রদূত সিমোনা মিরেলা মিকুলেস্কুর স্থলাভিষিক্ত হবেন। সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে এ মাসের মধ্যে উজবেকিস্তানের সামারকান্দে। বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহম্মদ ইউনুস এই নির্বাচনের ফলকে “এক ল্যান্ডমার্ক অর্জন” বলে আখ্যায়িত করেছেন এবং শিক্ষা ও সংস্কৃতি উপদেষ্টাগণ এবং স্থায়ী মিশনকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেছেন। শিক্ষা উপদেষ্টা ড. সি.আর. আবрар উল্লেখ করেছেন, “ইউনেস্কোর সর্বোচ্চ পদে বাংলাদেশের এ নির্বাচন আমাদের শিক্ষা, সংস্কৃতি ও শিল্পে দেশীয় অবদানকে বিশ্বমঞ্চে নিয়ে যাবে।” সংস্কৃতি উপদেষ্টা মোস্তফা সফর ফরুকি বলেন, “সম্প্রতি ইউনেস্কোর বিভিন্ন অধিবেশনে বাংলাদেশের সক্রিয় অংশগ্রহণ ইতিমধ্যে প্রশংসা কুড়িয়েছে; এই নতুন দায়িত্ব আমাদের শিল্প ও ঐতিহ্যকে আন্তর্জাতিকভাবে আত্মপ্রকাশের সুযোগ দেবে।” প্রতিনিধি পর্যায়ে ২০২১ সাল থেকে বাংলাদেশকে ইউনেস্কোতে প্রতিনিধিত্ব করছেন খন্দকার এম. তালহা। নির্বাচনের পর তিনি গভীর কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন নির্বাহী বোর্ড সদস্যদের প্রতি এবং বলছেন, “এটি আমাদের দেশের জন্য একটি ঐতিহাসিক অর্জন।” তিনি আরও প্রতিজ্ঞা করেছেন, দায়িত্ব গ্রহণের আগেই তিনি কাজ শুরু করবেন এবং ইউনেস্কোর আদর্শ ও উদ্দেশ্য রক্ষা করতে গভীরভাবে নিয়োজিত থাকবেন। এই জয় বাংলাদেশের ৫৩ বছরের সদস্যপদে একটি মাইলফলক, যা আন্তর্জাতিক সংস্কৃতি, শিক্ষা ও ঐতিহ্য ক্ষেত্রে তার প্রভাবকে আরও সুদৃঢ় করবে।