মিয়ানমারের সশস্ত্র সংগঠন আরাকান আর্মি (এএ) ও তাদের রাজনৈতিক শাখা ইউনাইটেড লীগ অব আরাকান (ইউএলএ) অভিযোগ তুলেছে যে বাংলাদেশ বর্ডার গার্ড (বিজিবি) নাকি রোহিঙ্গা জঙ্গি সংগঠন আরসা (ARSA) ও আরএসও (RSO) কে সমর্থন দিচ্ছে। তবে বিজিবি এই অভিযোগকে ভিত্তিহীন ও বিভ্রান্তিকর প্রমাণ করে তা দৃঢ়ভাবে প্রত্যাখ্যান করেছে।বিজিবির দাবি, তারা কখনোই এসব উগ্রপন্থী সংগঠনকে প্রশ্রয় দেয়নি বরং ধারাবাহিকভাবে কঠোর পদক্ষেপ নিয়েছে তাদের কার্যকলাপ দমন করতে। আরসার শীর্ষ নেতা আতাউল্লাহ জুনুনিসহ বহু সদস্যকে গ্রেফতার করা হয়েছে, যা প্রমাণ করে যে বিজিবি তাদের রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকি হিসেবেই দেখে।২০২৩ সালের শেষ দিকে মিয়ানমারে যুদ্ধবিরতি ভেঙে যাওয়ার পর সীমান্তের নিরাপত্তা আরো জোরদার করেছে বিজিবি। নাফ নদী থেকে শুরু করে বান্দরবান ও কক্সবাজার সীমান্তজুড়ে টহল বাড়ানো হয়েছে। ছয় ঘণ্টা অন্তর পালাবদল করে সেনারা পাহারা দিচ্ছেন, যাতে সন্ত্রাসী ও মাদককারবারিদের প্রবেশপথ সম্পূর্ণভাবে বন্ধ করা যায়। সীমান্ত এলাকায় অতিরিক্ত সেনা মোতায়েন, মাইন আক্রান্ত অঞ্চল চিহ্নিতকরণ, স্থানীয়দের জন্য আর্থিক সহায়তা ও চিকিৎসা ক্যাম্প পরিচালনার মতো উদ্যোগ বিজিবির আন্তরিকতাকেই তুলে ধরছে।অন্যদিকে, আরাকান আর্মির ভেতরে চলছে ভয়াবহ সংকট। উত্তরের মংডু ও বুথিডাং এলাকায় খাদ্যাভাব, মাদক চোরাচালান, অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব এবং মানসিক অবসাদে ভুগছে তাদের যোদ্ধারা। অনেক সদস্য দল ছেড়ে পালিয়েছে। এমনকি এক লেফটেন্যান্ট বাংলাদেশে আত্মসমর্পণ করেছে বলে সূত্র জানাচ্ছে।শুধু রোহিঙ্গাদের উপর নয়, পাহাড়ি ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠী যেমন ম্রো ও তঞ্চঙ্গ্যা সম্প্রদায়ও এএর নিপীড়নের শিকার। রোহিঙ্গা শরণার্থীদের অনেকে বাধ্য হয়ে সীমান্ত পাড়ি দিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিচ্ছেন।বিজিবির মতে, এসব অভিযোগ আসলে এএ-ইউএলএর নিজেদের ব্যর্থতা আড়াল করার কৌশল। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের উচিত প্রকৃত অপরাধীদের জবাবদিহির আওতায় আনা এবং রোহিঙ্গাদের ন্যায়সঙ্গত প্রত্যাবর্তনের পরিবেশ তৈরি করা।বিজিবি স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে, তারা কখনোই আরসা কিংবা আরএসওর সাথে যুক্ত নয়। তাদের একমাত্র লক্ষ্য সীমান্ত সুরক্ষা, মাদক প্রতিরোধ ও মানবিক দায়িত্ব পালন করা।