বক্সিং বিশ্বে নেমে এসেছে গভীর শোক। মাত্র ৪৬ বছর বয়সে না ফেরার দেশে পাড়ি জমালেন ব্রিটিশ বক্সিং আইকন রিকি “দ্য হিটম্যান” হ্যাটন। শনিবার সকালে গ্রেটার ম্যানচেস্টারের হাইডের নিজের বাড়িতে তাঁর মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।গ্রেটার ম্যানচেস্টার পুলিশের মুখপাত্র নিশ্চিত করেছেন, স্থানীয় সময় সকাল ৬টা ৪৫ মিনিটে এক বাসিন্দার ফোনে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। তবে প্রাথমিক তদন্তে কোনো সন্দেহজনক কিছু পাওয়া যায়নি।হ্যাটনের মৃত্যু আরও বেদনাদায়ক হয়ে উঠেছে তাঁর ভক্তদের কাছে কারণ কয়েক মাস আগেই তিনি ঘোষণা দিয়েছিলেন রিংয়ে ফেরার। চলতি বছরের ডিসেম্বরে দুবাইতে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছিল তাঁর প্রত্যাবর্তনের লড়াই। কিন্তু সেই স্বপ্ন আর পূরণ হলো না।কিংবদন্তির উত্থান ও সংগ্রামম্যানচেস্টারে বেড়ে ওঠা হ্যাটন তাঁর নির্ভীক লড়াইয়ের ধরণ, সহজ-সরল ব্যক্তিত্ব এবং ম্যানচেস্টার সিটি সমর্থক হিসেবে পরিচয়ের জন্য ভক্তদের হৃদয়ে বিশেষ স্থান করে নিয়েছিলেন।তিনি একাধিক বিশ্ব শিরোপা জিতেছেন এবং আন্তর্জাতিক বক্সিং অঙ্গনে ব্রিটিশ পতাকা উড়িয়েছেন। তাঁর লাস ভেগাসের লড়াইগুলো বিশেষভাবে স্মরণীয়, যেখানে হাজারো সমর্থক সমুদ্র পাড়ি দিয়ে হাজির হতেন তাঁকে উৎসাহ দিতে।তবে সাফল্যের আড়ালেই ছিল ভিন্ন এক গল্প। মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যা, মাদকাসক্তি ও পারিবারিক টানাপোড়েন তাঁকে জীবনের বহু সময় বিপর্যস্ত করেছে। আত্মহত্যার চেষ্টার কথাও তিনি খোলাখুলি স্বীকার করেছিলেন। পরবর্তীতে চিকিৎসা, পরিবার ও ভক্তদের ভালোবাসায় আবার জীবনকে আঁকড়ে ধরেছিলেন।শেষ ভিডিও, শেষ বার্তামৃত্যুর আগের দিনই তিনি সামাজিক মাধ্যমে পোস্ট করেছিলেন নিজের ট্রেডমিলে দৌড়ানোর ভিডিও। ঘামে ভেজা মুখে ক্যামেরার দিকে মুষ্টি উঁচিয়ে বলেছিলেন—“আরেকটা ৫ কিমি শেষ! চিন্তা কোরো না, আমাদের ছেলে এখনো লড়ে যাচ্ছে।”এখন সেই ভিডিওই হাজারো ভক্তের কাছে হয়ে উঠেছে এক করুণ বিদায়বার্তা।বক্সিং দুনিয়ার অশ্রুহ্যাটনের মৃত্যু শুধু ব্রিটেন নয়, বিশ্ব বক্সিং ইতিহাসেই এক বড় শূন্যতা তৈরি করল। ভক্তদের কাছে তিনি শুধু একজন চ্যাম্পিয়ন ছিলেন না, বরং ছিলেন প্রেরণার প্রতীক। তাঁর গল্প রিংয়ের ভেতরে-বাইরে লড়াইয়ের এক অবিস্মরণীয় কাহিনি হয়ে থাকবে।