বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমীর ডা. শফিকুর রহমানের নেতৃত্বে চার সদস্যবিশিষ্ট একটি প্রতিনিধি দল ঢাকাস্থ ইউরোপীয় ইউনিয়নের দূতাবাসে ইউরোপীয় পার্লামেন্টের উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধিদের সঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকে অংশ নেয়। মঙ্গলবার বিকাল ৪টায় অনুষ্ঠিত এ বৈঠকে বাংলাদেশে আসন্ন জাতীয় নির্বাচন, গণতান্ত্রিক সংস্কার ও প্রোপোরশনাল রিপ্রেজেন্টেশন (পিআর) ভিত্তিক নির্বাচনী পদ্ধতি নিয়ে আলোচনা হয়।জামায়াতের পক্ষ থেকে বৈঠকে অংশ নেন নায়েবে আমীর ও সাবেক এমপি ডা. সৈয়দ আব্দুল্লাহ মো তাহের, সেক্রেটারি জেনারেল ও সাবেক এমপি অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার এবং পররাষ্ট্র বিষয়ক উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মাহমুদুল হাসান।অন্যদিকে ইউরোপীয় পার্লামেন্টের প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন মুনির সাতৌরী। তার সঙ্গে ছিলেন লুক্সেমবার্গের ইপিপি দলের ইসাবেলা ভিয়েডার-লিমা, পোল্যান্ডের ইসিআরের আরকাদিউস মুলারচিক, এস্তোনিয়ার রিনিউ ইউরোপের উর্মাস পায়েট এবং নেদারল্যান্ডসের দ্য গ্রিন্স দলের কাতারিনা ভিয়েইরা প্রমুখ।প্রেস ব্রিফিংয়ে নায়েবে আমীর ডা. সৈয়দ আব্দুল্লাহ মো তাহের বলেন, বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক ভবিষ্যৎ নিয়ে ইউরোপীয় পার্লামেন্টের সদস্যদের সঙ্গে অত্যন্ত সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশে আলোচনা হয়েছে। তিনি জানান, ইউরোপীয় প্রতিনিধিরা বাংলাদেশের আসন্ন নির্বাচনের স্বচ্ছতা ও প্রক্রিয়া সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে আগ্রহী ছিলেন।ডা. তাহের বলেন, বাংলাদেশের ৫৪ বছর পর একটি গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তনের সুযোগ এসেছে। রাজনৈতিক দলগুলো ঐক্যবদ্ধ হলে গণতান্ত্রিক সংস্কার ও একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন নিশ্চিত করা সম্ভব হবে। তিনি আরও বলেন, “আমরা উভয় কক্ষে প্রোপোরশনাল রিপ্রেজেন্টেশন চাই। এটি হলে কেন্দ্র দখল ও জোরপূর্বক ক্ষমতায় যাওয়ার সংস্কৃতি বন্ধ হবে।”জামায়াতের পক্ষ থেকে দাবি জানানো হয়, অতীতের অভিজ্ঞতায় দেখা গেছে প্রচলিত পদ্ধতিতে সুষ্ঠু নির্বাচন হয়নি। এজন্য পরীক্ষামূলকভাবে হলেও পিআর সিস্টেমে নির্বাচন আয়োজন করা প্রয়োজন। ইউরোপীয় প্রতিনিধিরাও জানিয়েছেন, তাদের দেশেও পিআর সিস্টেম চালু রয়েছে এবং তারা বিষয়টি সহজেই উপলব্ধি করতে পেরেছেন।প্রসঙ্গত, সম্প্রতি জাতীয় কনসেনসাস কমিটির আলোচনায় অংশ নেওয়া ৩১টি দলের মধ্যে ২৬টি দল পিআর পদ্ধতির পক্ষে মত দিয়েছে। জামায়াতের মতে, আইনি ভিত্তি তৈরি করে এই ঐকমত্য বাস্তবায়ন এখন কেবল সময়ের ব্যাপার।ডা. তাহের আরও বলেন, “আমরা নির্বাচনে না যাওয়ার কথা বলিনি। আমরা বলছি, পিআর পদ্ধতিই উত্তম। আমরা যুক্তি দিয়ে বোঝাচ্ছি এবং আশা করছি—তারা আমাদের যুক্তি গ্রহণ করবেন। আলোচনা টেবিলে বসেই সমাধান সম্ভব।”
